SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

পঞ্চম শ্রেণি (ইবতেদায়ী) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় - NCTB BOOK
Please, contribute to add content into নারী-পুরুষ সমতা.
Content

সমাজের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষ উভয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নারী-পুরুষ সমান অংশগ্রহণ এবং সমান অধিকার ভোগ করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। এ প্রসে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন-

“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। "

ভারতীয় উপমহাদেশে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাজকে সচেতন করতে অসামান্য অবদান রাখেন বেগম রোকেয়া। তিনি মনে করতেন নারী-পুরুষের মধ্যে বিভাজন নয় বরং সহযোগিতা প্রয়োজন। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ই ডিসেম্বর রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বেগম রোকেয়ার শিক্ষার প্রতি অসীম অনুরাগ ছিল। তিনি নারী শিক্ষার বিষয়ে সমাজে অসামান্য অবদান রাখেন। ১৯০৯ সালে তিনি ভাগলপুরে একটি বালিকা বিদ্যালর প্রতিষ্ঠা করেন, বিদ্যালয়টি পরে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। ১৯৩২ সালের ৯ই ডিসেম্বর এই মহিয়সী নারী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি আজীবন নারী শিক্ষার অগ্রগতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। বেগম রোকেয়া স্মরণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৯ই ডিসেম্বর সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে মেয়েরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো পেতে থাকে।

 

ক. এসো বলি

নিচের ছকটিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাত দেওয়া আছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের সহায়তার বিষয়গুলো আলোচনা কর।

 ছাত্রীছাত্র
ভর্তি৮৪%৮১%
ঝরে পড়া৩৪%৩২%
পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ কিন্তু ফলাফল ভালো নয়২৮%২৫%
ভালো ফলাফল নিয়ে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ২৮%২৮%


খ. এসো লিখি

নারীদের জন্য কমপক্ষে প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লেখ।


গ. আরও কিছু করি

অন্তত মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত মেয়েদের কেন পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া উচিত তা লেখ।


ঘ. যাচাই করি

উপযুক্ত শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর :

বেগম রোকেয়া ----------------- উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন।

Content added By

বিশ্বজুড়ে ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে পালন করা হয়। কীভাবে নারী দিবস পালন করা শুরু হয়েছিল?

• ১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ নিউইয়র্ক শহরের একটি পোশাক কারখানায় নারী পোশাক শ্রমিকেরা ন্যায্য মঞ্জুরি ও           শ্রমের দাবিতে আন্দোলন করেন। আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল পুরুষের সমান মজুরি এবং দৈনিক আট ঘণ্টা শ্রমের     দাবি। এই আন্দোলনে পুলিশ নির্যাতন চালায় এবং অনেককে গ্রেফতার করে।

• ১৯০৮ সালের একই দিনে নিউইয়র্কে পোশাক শ্রমিক ইউনিয়নের নারীরা আরেকটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। ১৪          দিন ধরে এই প্রতিবাদ চলে এবং এতে প্রায় বিশ হাজার নারী শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম এবং    শিশুশ্রম বন্ধের দাবিতে তাঁরা এ আন্দোলন করেন। কর্মক্ষেত্রে এই আন্দোলন নারীদের ঐক্যবদ্ধতার একটি বড়            উদাহরণ।

• ১৯১০ সালে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মান সমাজতাত্ত্বিক ক্লারা জেটকিন নারীর ভোটাধিকার      এবং একটি নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান।

• ১৯১৩ সালে রাশিয়ায় নারীরা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রবিবার নারী দিবস হিসেবে পালন করে।

• ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ ৮ই মার্চকে 'আন্তর্জাতিক নারী দিবস' হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয় ।

এই দিনটিতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করাসহ নানা বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়।

 

ক. এসো বলি

এখানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের একটি আয়োজনের ঘোষণা আছে। এখান থেকে তোমরা কী প্রত্যাশা কর তা শিক্ষকের সহায়তায় আলোচনা কর ।

দৈনদিন জীবনের সকল স্তরে নারীর সমতার দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে বিশ্বব্যাপী 'উৎসাহমূলক পরিবর্তন'-এর দাবি জানানো হচ্ছে। নারী-পুরুষ সমতার অপ্রসন্নতাকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসাই আমাদের কাম্য।


খ. এসো লিখি

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস নিয়ে একটি ঘটনাপঞ্জি তৈরি কর।


গ. আরও কিছু করি

আগামী ৮ই মার্চ তারিখে নারী দিবস উপলক্ষে তোমাদের বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা কর। এ উপলক্ষে পোস্টার তৈরি কর এবং সম্ভব হলে কর্মস্থলে নারী অধিকার বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য স্থানীয় কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানাও।


ঘ. যাচাই করি

সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন দাও।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস কারা প্রথম শুরু করেছিলেন?

ক. কৃষকরা             খ. নারী পোশাক শ্রমিকগণ

গ. শিক্ষকরা            ঘ. পুলিশ বাহিনী

 

Content added By

বিশ্বে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সনদ ও নীতিমালা রয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে নারীর অধিকারকে মানবাধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া। কিন্তু প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতিত হয়। ফলে নারীর মানবাধিকার খর্ব হয়। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের নারী নির্যাতন সম্পর্কে জানা যায় । যেমন : নারীদের এসিড ছুঁড়ে মারা, যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন ও হত্যা, ধর্মীয় অপরাধের কথা বলে অবৈধভাবে শান্তি দেওয়া।

যৌতুকের জন্য নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। এই কারণে সমাজে অনেকে নারীকে বোঝা হিসেবে পণ্য করে । অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের বিনা অনুমতিতে মেয়েরা বাড়ির বাইরে যেতে বা কারও সাথে মিশতে পারে না। এতে পরিবারের সুনাম নষ্ট হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। নারী নির্যাতনের কারণে মেয়েদের শিক্ষা, বাইরে কাজের দক্ষতা বা সুযোগ ক্ষতি হয়।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের সরকার কী করছে?

সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে। নিপীড়নের শিকার নারী ও শিশুদের চিকিৎসাসেবা, আইনি সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শসেবা প্রদান করছে। এছাড়াও নির্যাতন দমনের জন্য ২০১১ সালে জাতীর নারী উন্নয়ন নীতি প্রবর্তন করা হয়েছে। তবে এই ধরনের নির্যাতন, নিপীড়ন প্রতিরোধে সামাজিক মূল্যবোধের উন্নয়ন জরুরি।

 

ক. এসো বলি

পাশের পৃষ্ঠার পোস্টারটি দেখে আলোচনা কর ছবির মানুষগুলো কী অর্জন করতে চায় ।


খ. এসো লিখি

নারী নির্যাতন মানুষ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর। এই ভয়াবহ বিষয় সম্পর্কে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থানীয় পত্রিকার একটি চিঠি লেখ।


গ. আরও কিছু করি

বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করে। এ মন্ত্রণায়ের অধীনে নিচের দুটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু তথ্য সংগ্রহ কর :

• বাংলাদেশ শিশু একাডেমি

• মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর


ঘ. যাচাই করি

উপযুক্ত শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর :

নারী নির্যাতন সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আমরা--------------মাধ্যমে পরিবর্তন করতে পারি ।

Content added By